• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

৫৫ বছরেও মিলেনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি

  • ''
  • প্রকাশিত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

সেনবাগ প্রতিনিধি:

আজ সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নোয়াখালীর সেনবাগবাসীর জন্য এক শোকাবহ স্মরণীয় দিন। ১৯৬৯’র সালের এই দিনে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় মামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী যখন আন্দেলন ভয়াবহ রূপ লাভ করে তখন (১৫ ফেব্রুয়ারী) কারা অভ্যান্তরে সার্জেন জহুরুল হককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

এর প্রতিবাদে সারাদেশের ন্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা বিক্ষোভে পেটে পড়লে তখনকার প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারী করে। ওই সময় (১৮ ফেব্রুয়ারী) পুলিশের গুলিতে রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সামসুজ্জোহা নিহত হয়। তখন (১৯ ফেব্রুয়ারী) ড. সামসুজ্জোহা নিহতের প্রতিবাদে তৎকালীন সেনবাগ ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে সেনবাগ থানায় কালো পতাকা উত্তোলন করতে গেলে বিক্ষোভ কারীদের লক্ষ করে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন তিন ছাত্রসহ চার যুবক ও আহত হয় ১৫/২০জন। এরা হচ্ছে : সেনবাগ উপজেলার অর্জুনতলা গ্রামের অফিজের রহমান, বাবুপুর গ্রামের আবুল কালাম, জিরুয়া গ্রামের সামছুল হক ও মোহাম্মদপুর গ্রামের খুরশিদ আলম।

ঘটনার পর একে একে ৫৫টি বছর পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত ৬৯-এর সেই ঘটনায় নিহত ও আহতদের পরিবার পায়নি কোন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং তাদের পরিবারগুলো পাননি কোন রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা। প্রতি বছর সার্জেন জহরুল হক ও ড. সামসুজ্জোহা মৃত্যু দিবস পালন করা হলেও সেনবাগে চার শহীদের খোজ কেউ রাখেনা।

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নোয়াখালীর সেনবাগে এসে নিহত চার শহীদের কবর জিয়ারত করেন এবং ওই পরিবারের লোকজনের মাঝে ৫শত টাকা ও একটি করে সনদপত্র দেন। এই শুধু তাদের স্বীকৃতি।

দীর্ঘদিন থেকে (১৯ ফেব্রুয়ারী) সেনবাগে ৪ শহীদ দিবস ঘোষনা করার দাবীতে এখানকার সর্বস্তরের লোকজন সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন শুরু করে। এরপর সেনবাগ উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে চার শহীদদের কবরগুলো বাউন্ডারী করে দেয় ।
এরপর তৎকালীর সেনবাগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা শহীদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রালয়ের ববাবরে চিঠি লিখলে।

বিগত ২০১২সালের (২২জানুয়ারি) তারিখে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রলালয়ের পরিকল্পনা শাখা’র সিনিয়র সহকারি প্রধান মুহাম্মদ নুরুল আমিন খান স্বাক্ষরিত এক পত্রে চার শহীদ স্মরনে সেনবাগ থানা চত্বরে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর প্রধান প্রকৌশলী বরাবর চিঠি প্রেরণ করেন।

কিন্তু ১৩ বছর গত হতে চললেও এখন পর্যন্ত এর নির্মাণকাজ কাজ শুরু হয়নি। এনিয়ে এলাকার লোকজনের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আজ সোমবারও সেনবাগে চার শহীদের রাস্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবীতে সেনবাগ প্রেসক্লাব চত্বতে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা করবে সেনবাগ প্রেসক্লাব।

৬৯’র ওই সময়ের ছাত্র সংগ্রাম কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ আবু তাহের অভিলম্বে চার শহীদেকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও তাদের পরিবারের জীবিত সদস্যদের সহযোগিতা করা দাবী জানান সরকারের নিকট । ঐসৈময় পুলিশের গুলিতে আহত পুঙ্গু মাষ্টার নাছির ঊদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেনবাগে এসে শহীদের কবর জিয়ারত করেন এবং ৫শত টাকা একটি করে সনদ দেন।

এরপর, দীর্ঘ ৫৫ বছর অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত রাষ্ট্রিয় স্বীকৃতি পাননি তিনি সহ অপর আহতরা। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর নিকট স্বীকৃতি দেওয়ার দাবী জানান।
/মামুন

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads